এক রাজকন্যার গল্প!
Adnan Mahmud Tamim
Catagories:
Academic articles,
ANATOMY,
PHYSIOLOGY
এক রাজকন্যার গল্প ❤(পুরোটা পড়বেন)
(Prenatal stage)
অনেকদিন আগে এমব্রায়ো নামক একটা গ্রহে Yolk sac নামক একটি দেশে dorsal wall নামক জায়গায় জন্ম নেয় একটি ফুটফুটে শিশু(premordial germ cell)..শিশুটি ছিলো রাজ বংশের এবং তাদের বংশের প্রথম মেয়ে, তাই স্বাভাবিকভাবেই সেই এই রাজ্যের রাজকন্যা। রাজকন্যার জন্ম তার মামাবাড়িতে হয়েছিলো (dorsal wall of yolk sac), জন্মের পরপরই পুরো রাজ্যে আনন্দ উৎসব শুরু হয় এবং রাজকন্যাকে রাজ্যে নেয়ার সকল ব্যবস্থা করা হয়। রাজকন্যার মামাবাড়ি থেকে তাদের রাজ্য খানিকটা দূরে genital ridge নামক জায়গায় এবং তাদের রাজপ্রাসাদের নাম gonad (in case of female ovary).
কিছু দিনের মধ্যেই বিপুল আনন্দ উৎসবের মাধ্যমে রাজকন্যাকে রাজপ্রাসাদে বরণ করে নেয়া হয় (during 5th week in developind gonads)!
রাজা রাণী ও রাজপরিবারে সুখের ছায়া নেমে এলো এবং মেয়ে বড় হওয়ার সাথে সাথে রাজার চিন্তাও বাড়তে থাকলো, কিভাবে মেয়েকে শত্রুদের হাত থেকে ও সকল বিপদ থেকে রক্ষা করবেন। তখনো যদিও রাজকন্যার কোনো নাম রাখা হয়নি,রাজকন্যা আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে (mitosis in primordial germ cell). রাজকন্যা যখন বড় হচ্ছে প্রথমে তার নাম রাখা হয় Oogonia, তারপর যখন আরও একটু বড় হয় এই নাম বদলে তার নাম রাখা হয় primary Oocyte. যেহেতু রাজকন্যা এখন অনেকটা বড় হয়ে গেছে তাই রাজা রাজকন্যার সুরক্ষার জন্য flattened epithelial cell নামক শক্তিশালী একদল সৈন্য নিয়োগ করেন, যারা রাজকন্যার চারদিকে বেষ্ঠন করে থাকবে সবসময়। (primary Oocyte with flattened epithelium cell is called primordial follicle)
রাজকন্যা বড় হওয়ায় সাথে সাথে তাকে meiosis 1 নামক স্কুলে prophase এ ভর্তি করা হলো। রাজা স্বপ্ন দেখতেন একদিন রাজকন্যাকে meiosis 2 নামক মেডিকেলে পড়িয়ে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন।
অন্যদিকে রাজকন্যা meiosis 1 নামক স্কুলে পড়াশোনা শেষ করে ফেলে। পড়ালেখার প্রথম পর্যায় শেষ করায় রাজকন্যাকে secondary oocyte বলে ডাকতো সবাই।(and formation of polar body with secondary oocyte after meiosis 1)
রাজা তখন অনেক খুশি হয়ে মেয়েকে meiosis 2 নামক মেডিকেলে ভর্তি করেন,প্রথমে ভালো করে সব কার্ড টার্মে পাশ করলেও মেটাফেজ নামক টার্মে রাজকন্যা বারবার ফেল করতে থাকেন, কারণ রাজপ্রাসাদে এই বদ্ধ জীবনে রাজকন্যার পড়তে আর মন বসেনা।তাই তিনি প্লান করলেন এবার পালিয়ে যাবোই যাবো। রাজকন্যার দুই বন্ধু LH ও prostaglandin এর সহায়তায় cumulus oophorus সহ রাজকন্যা stigma নামক একটি গোপন পথে রাজপ্রাসাদ থেকে বেরিয়ে আসেন(ovulation)।
(Postnatal stage)
রাজকন্যা পড়াশোনায় খুব ভালো হওয়ায় প্রোফেজ ক্লাসের সবগুলো পরীক্ষায় ভালো করতে থাকে এবং প্রোফেজ ক্লাসের ডিপ্লোটিন নামক এক্সামে এসে রাজার আদেশে রাজকন্যার পড়ালেখা হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায়, এবং রাজা আদেশ করেন এখন পারিবারিক কাজে মন দিতে ও রান্নাবান্না শিখতে। রাজকন্যা তখন স্কুলে যেতে চাইতো কিন্তু চারপাশে ঘেরা flattened epithelial cell/follicular cell নামক সৈন্যরা Oocyte maturation inhibitor নামক একটা দেয়াল নির্মাণ করে যে জন্য রাজকন্যার আর স্কুলে যাওয়া হয় নি। বন্দী জীবন খুব কষ্ট লাগতো রাজকন্যার তাই মাঝে মাঝে ইচ্ছে হতো দূরে কোথায়ও পালিয়ে যেতে যেখানে কোনো বাধা থাকবে না মুক্তভাবে জীবন যাপন করা যাবে। এভাবেই চলতে থাকে, রাজকন্যা যখন puberty তে তখন আবার তাকে স্কুলে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয় তবে রাজকন্যার সুরক্ষার জন্য আগের flattened epithelial cell সৈন্যদের সরিয়ে প্রথমে cuboidal cell ও পরে granulosa cell নামক শক্তিশালী সৈন্য দ্বারা বেষ্ঠন করা হয় এবং রাজকন্যার যেনো কোনোভাবেই কেউ কোনো ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য granulosa cell সৈন্যস্তর ও রাজকন্যার মধ্যখানে glycoprotein নির্মিত zona pellucida নামের একটি দেয়াল তৈরী করা হয় ।এতো এতো সুরক্ষার ব্যবস্থা করেও রাজা ক্ষান্ত হন নি, শত্রুদের হাত থেকে রাজকন্যাকে (primary oocyte) বাঁচাতে theca externa ও interna নামের দুটি দেয়াল তৈরী করেন granulosa cells সৈন্যদের বাইরে, এভাবেই রাজকন্যাকে কঠোর নিরাপত্তা দিয়ে রাখা হতো। (this stage is called primary follicle) বদ্ধ জীবন কার ভালো লাগে রাজকন্যা মুক্ত হতে চাইতো এক মুক্ত জীবনের স্বপ্ন দেখতো সবসময় ,তাই রাজকন্যা plan করে granulosa cells এর কিছু সৈন্যদের সাথে বন্ধুত্ব করে এবং বলে যেকোনো পরিস্থিতিতে তাকে যেনো ছেড়ে না যায় সেই বন্ধু সৈন্যগুলো তখন রাজকন্যাকে zona pellucida এর চারদিকে বেষ্ঠন করে রাখতো, তাদের নাম ছিলো cumulus Oophorus…রাজকন্যার সাথে বন্ধুত্ব হওয়ায় granulosa cells সৈন্যদের সাথে cumulus oophorus দের দূরত্ব তৈরী হয় (fluid filled space -antrum)।
রাজপ্রাসাদের রক্ষীদের সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে এবং ফিমব্রি নামক সৈন্যদের হাতে cumulas oophorus এর অনেক সৈন্য মারা যায় এবং কিছু সৈন্য বাকি থাকে যাদের নাম হলো corona radiata। তবে ফিমব্রী সৈন্যদের কিছু সৈন্য রাজকন্যাকে infundibulum নামক একটি গোপন পথের সন্ধান দেয় ,অনেক উচু উচু পাহাড় (mucosal layer) ও বড় বড় গাছ (cilia) সব ডিঙ্গিয়ে রাজকন্যা ও corona radiata সৈন্যদল ampulla নামক একটি জায়গায় বিশ্রাম নেয়,আর ampulla তে অনেক বেশি পাহাড় পর্বত ও গাছ গাছালি থাকায় পথ খুজে বের করা দুঃসাধ্য হয়ে গিয়েছিল। বিশ্রাম নিতে নিতে রাজকন্যা ভাবতে থাকেন কেমন হতো যদি কেউ একজন আসতো আমাকে উদ্ধার করতো এই জীবন থেকে,কবে আসবে আমার সেই রাজকুমার যে আমাকে নতুন জীবন দেখাবে। তাই রাজকন্যা রাজকুমারের আশায় opsonin সহ আরও কিছু রাজকীয় সুগন্ধি আশে পাশে ছড়িয়ে দেন যেনো রাজকুমার বুঝতে পারে সে আশে পাশে আছে।অন্যদিকে রাজকন্যা হারিয়ে যাওয়ার খবর আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে এবং রাজকন্যাকে খুজতে পুরো গ্রহের সকল রাজ্যের 300 মিলিয়ন রাজকুমার বেড়িয়ে পরে। কিন্তু cervix নামক জায়গায় এসে মাত্র কয়েক হাজার রাজকুমার বাদে বাকি সবাই মারা যায়। সব রাজকুমার বীরের বেশে এক্রোসোম নামক হাতিয়ার মাথায় নিয়ে ছুটতে থাকে।
Uterus, fundus নামক জায়গায় অনেক রাজকুমার মারা যায় খাদ্যের অভাবে, কিন্তু যারা শক্তিশালী ও বীর তারা isthmus নামক গোহার দিকে ছুটতে থাকে। রাজকন্যার ছড়িয়ে দেওয়া opsonin এর সুগন্ধ কিছু রাজকুমার পায় তাই তারা ampulla এর দিকে ছুটতে থাকে, আর যারা সুগন্ধ পায়না তারা গন্তব্যহীন হয়ে হারিয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ampulla তে মাত্র তিনশত রাজকুমার বেঁচে থাকে এবং শেষপর্যন্ত তারা রাজকন্যাকে খুঁজে পায়। তবে সমস্যা হলো corona radiata সৈন্যদল ও zona pellucida নামক শক্ত দেয়াল ভেঙ্গে তবেই রাজকন্যার দেখা মিলবে। তাই সবাই নিজেদের প্রস্তুত করতে শুরু করে এবং সকল অস্ত্র মেরামত করতে সাত ঘন্টা সময় নেয় (capacitation)। তারপর সবাই ঝাপিয়ে পড়ে corona radiata সৈন্যদের সাথে যুদ্ধ করতে।৷ রাজকুমাররা এক্রোসোম হাতিয়ার থেকে hayaluronidase স্পেল ছাড়তে থাকে এবং একে একে সব corona radiata সৈন্য মারা যেতে থাকে এবং কিছুসংখ্যক রাজকুমার ও নিহত হয়। নেক্সট স্টেপটা হলো সবচেয়ে কঠিন ও ভাগ্যের খেলা কারণ মাত্র একজনই এই স্টেপে জিতবে আর বাকি সবাই মরবে। যে যতো আগে zona pellucida দেয়ালে দৌঁড়ে গিয়ে দেয়াল ভাঙ্গবে সেই জিতবে। সবাই দৌঁড়াতে থাকে তবে একজন রাজকুমার সবাইকে পেছনে ফেলে সবার আগে zona pellucida এর ZP3 নামক চাবি নিজের কাছে নিয়ে নেয় এবং এক্রোসোম থেকে এক্রোসিন ও ট্রিপসিন নামক স্পেল ছেড়ে দেয়াল ভেঙ্গে প্রবেশ করে (acrosomal reaction)এবং রাজকন্যার কাছে চলে আসে (fusion of oocyte and sperm cell membrane)।
রাজকন্যা রাজকুমার কে পেয়ে আনন্দে আত্নহারা অবস্থা এবং আর যাতে কেউ আসতে না পারে সেজন্য রাজকন্যা lysosomal enzyme স্পেল নিজের আশেপাশে ছড়িয়ে দেয়, ফলে zona pellucida দেয়াল আজীবনের জন্য বন্ধ হয়ে যায়।
রাজকুমারের সাথে প্রথম দেখা তাই রাজকন্যা নিজেকে যোগ্য প্রমাণ করতে meiosis 2 মেডিকেল কলেজ থেকে MBBS পাশ করেন এবং পরিপূর্ণ রাজকন্যায় পরিণত হোন (Oocyte) (with formation of polar body)
তারপর রাজকন্যা রাজকুমরারে সাথে দেখা করতে যাবেন তাই হালকা সাজুগুজু করেন (female proneucleus)। রাজকুমারও তখন নিজেকে প্রস্তুত করেন(male proneucleus)।
রাজকন্যার সাথে রাজকুমারের বিয়ে হয়।
তারপর সেই আবেগঘন রোমান্টিক মুহূর্ত রাজকন্যা রাজকুমার দুজনে পাশাপাশি একে অপরের দিকে চেয়ে আছে সাথে রাজকুমার বাংলা ছায়াছবির গান গাচ্ছেন* কোটি কোটি স্পার্মের ভিড়ে তোমার কাছে আমি আসবো ফিরে*😌😌।
তখন রাজকন্যা দৌঁড়ে রাজকুমারের কাছে এসে হাত ধরেন এবং বলেন *আমি তুমি বিহীন এতোদিন আমি অপূর্ণ ছিলাম (23 chromosome) আজ আমি পূর্ণতা পেলাম,তুমি সেই পূর্ণতা আমার অনুভবে 😌 (23+23=46 chromose =zygote formation)
বি.দ্র : এখানে Oogenesis এবং fertilization কে তুলে ধরার চেষ্ঠা করেছি।
Story writer :Adnan Mahmud Tamim(SOMC 57)
Share this blog to social media:
Tags:
Suggested post
No post related to the current post. Please click on 'view more' to see more posts